মেক্সিকো মিশর ও ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটা পিরামিডের মধ্যে তিন দরজাওয়ালা কয়েকটা কক্ষ আছে। মজার বিষয় হলো লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা দ্যা লাস্ট সাপারে দেখা যায় ইসা আঃ তার ডিসাইপলদের নিয়ে উনার মৃত্যুর আগে শেষ একবার খেতে বসে। যেটাকে লাস্ট সাপার বলা হয়েছে। এই ছবিতে খেয়াল করলে দেখবেন পিছনে এরকম তিন দরজা দেখা যায়। ক্লিয়ারলি বুঝা যায় এটা কোনো একটা পিরামিডের মধ্যে সংগঠিত হয়েছিল।
কোরানে সুরা মায়িদার ১১৪ নাম্বার আয়াতে বলা হচ্ছে,
قَالَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ ٱللَّهُمَّ رَبَّنَآ أَنزِلْ عَلَيْنَا مَآئِدَةً مِّنَ ٱلسَّمَآءِ تَكُونُ لَنَا عِيدًا لِّأَوَّلِنَا وَءَاخِرِنَا وَءَايَةً مِّنكَۖ وَٱرْزُقْنَا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلرَّٰزِقِينَ
মারইয়ামের পুত্র ঈসা বলল, ‘হে আল্লাহ, হে আমাদের রব, আসমান থেকে আমাদের প্রতি খাবারপূর্ণ দস্তরখান নাযিল করুন; এটা আমাদের জন্য ঈদ হবে। আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের জন্য। আর আপনার পক্ষ থেকে এক নিদর্শন হবে। আর আমাদেরকে রিয্ক দান করুন, আপনিই শ্রেষ্ঠ রিয্কদাতা’।
এঈ আয়াতে মায়িদা শব্দটা আছে যার অর্থ বিছানো টেবিল। এখান থেকে সুরা মায়িদার নামকরণ করা হয়েছে। এটাই লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা দ্যা লাস্ট সাপারের প্রেক্ষাপট।
বাইবেলে ইসা আঃ জীবনের ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সের সকল বিবরণ মিসিং। শুধুমাত্র গসপেল অব লুকে বলা হয়েছে ইসা আঃ এর বয়স যখন ১২ বছর তখন সে তার শিক্ষকদের সাথে জেরুজালেমে একটি টেম্পলের পিছনে ছিল এবং তার বাবা মা তাকে রেখেই ভুলে বাড়ি চলে যায়। এরপর ইসা আঃ এর জীবনী আবার শুরু হয় ৩০ বছর বয়স থেকে। এই ১৮ বছরের কোনো বর্ণনা বাইবেলে নেই।
১৮৯৪ সালে একজন রাশিয়ান ডাক্তার নিকোলাস নটোভিস একটা বই লিখেন, দ্যা সিক্রেট লাইফ অব জিসাস ক্রাইস্ট। এখানে লেখকের দাবি অনুযায়ী ইসা আঃ কে ১২ বছর বয়সে সে সময়ের জেরুজালেমের ফাদাররা তাকে মিশর, ভারত ও তিব্বতে নিয়ে যায় সেইসব দেশের সংস্কৃতি ও ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা নেওয়ার জন্য। লেখক নটোভিস দাবি করেন তিনি ভারতের লাদাখে অবস্থিত হেমিস মনাস্টেরি ভ্রমন করেছেন যেখানে ইসা আঃ এর জীবনের মিসিং ১২ বছরের ম্যানুস্ক্রিপ্ট আছে। লেখকের দাবি এই ম্যানুস্ক্রিপ্ট গুলো তিবেতিয়ান ভাষায় লেখা এবং এগুলো বর্ণনা করে ইসা আঃ কিভাবে ভারত ও তিব্বতে ভ্রমণ করে এবং ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করে।
এই মনাস্টেরিতে পাওয়া ম্যানুস্ক্রিপ্ট অনুযায়ী, ইসা আঃ ভারতে আসেন একজন যুবক হিসেবে। এরপর তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মনদের থেকে ভারতীয় বিভিন্ন বিশ্বাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন। এরপর তিনি তিব্বতে চলে যান। সেখানে তিনি তিব্বতের বৌদ্ধগুরুদের সাথে দেখা করেন এবং তাদের থেকে বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা নেন।
বৌদ্ধ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের থেকে শিক্ষা নেওয়ার পর ইসা আঃ চলে যান মিশরে। সেখান থেকে তিনি মিশরীয় প্রাচীন ধর্ম বিশ্বাস গুলো থেকে শিক্ষা নেন। দ্যা লাস্ট সাপারের প্রেক্ষাপট দেখলে বুঝা যায় এটা মিশরের ছবি, জেরুজালেমের না। ইতিহাস মাত্রই বিকৃত। কে বা কারা নিজেদের স্বার্থে ইতিহাস লিখে রেখেছে। যাইহোক, এরপর তিনি জেরুজালেমে ফিরে যান এবং জীবনের শেষ দুই বছর পার করেন।
প্রচলিত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পন্ডিতগণ এই বইয়ের লেখককে ভুয়া বলেছেন। অনেকে দাবি করেছে তার বই যে ম্যানুস্ক্রিপ্টের উপর লেখা সেগুলো ফ্যাব্রিকেটেড। তবুও এই বই অনেক নতুন গবেষকদের রিসার্চ করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে এবং ইসা আঃ এর জীবনী পড়ার নতুন দিক উন্মোচিত করেছে।
খ্রিষ্টানদের মধ্যে থেকে এই বইকে ভুল বলার পরেও আমার কাছে যেকারণে এই বইটা ইন্টারেস্টিং লেগেছে সেগুলো হলোঃ
ইসা আঃ এর যতগুলো পেইন্টিংএ হ্যান্ড জেস্টার দেখা যায়, সেগুলো সব গৌতম বুদ্ধের হ্যান্ড জেস্টারের সাথে মিলে যায়। বৌদ্ধ ধর্ম অবশ্যই খ্রিস্ট ধর্মের অনেক আগে এসেছে। এটা প্রমাণ করে ইসা আঃ অবশ্যই ভারত ও তিব্বতে এসেছিলেন। দ্বিতীয়ত, বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী, ইসা আঃ যেভাবে প্রার্থনা করত, হাটু গেঁড়ে বসে মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে, সেগুলো প্রাচীন মিশরীয়দের প্রার্থনা করার সাথে হুবহু মিলে যায়। এগুলো একটা জিনিস ই প্রমাণ করে, ইসা আঃ অবশ্যই ভারত, তিব্বত ও মিশর থেকে শিক্ষা নিয়েছিল।
আমি আরো একটা বিষয় খুব স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাচ্ছি যে সকল সভ্যতা ও সকল ধর্মের মৌলিক কিছু বিষয় একদম অভিন্ন। একটু চিন্তা করলেই এগুলো স্পষ্ট উপলব্ধি করা যায়।